ভবন নির্মাণে জায়গা ছাড়ের পরিমাণ কমছে

Md. Ashraful Haque 17 Nov, 2012 ভিউ : 99681
ভবন নির্মাণে জায়গা ছাড়ের পরিমাণ কমছে
ঢাকা মহানগরী এলাকায় নতুন ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে জটিলতা নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর ইমারত (নির্মাণ, উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও অপসারণ) বিধিমালা-২০০৮ সংশোধন করা হচ্ছে। নয়া বিধিমালা অনুযায়ী এখন থেকে রাজধানীতে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে চারপাশের জায়গা ছাড় দেওয়ার পরিমাণ আড়াই শতাংশ কমানো হচ্ছে। এরই মধ্যে বিধিমালাটি সংশোধনীর খসড়া চূড়ান্ত করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। শিগগিরই এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। সরকারি একটি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ ব্যাপারে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম রাব্বানী সমকালকে বলেন, নতুন বাড়ি নির্মাণে স্থবিরতা কাটাতেই বিধিমালাটি সংশোধন করা হচ্ছে। সংশোধনীতে ভবনের চারপাশের জায়গা ছাড়ার পরিমাণ কমানো হচ্ছে। তবে পরিবেশের কথা বিবেচনা করে বেশি কমানো সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি বলেন, জায়গা ছাড়ার বিধান একেক এলাকায় একেক রকমের করার সুপারিশ এসেছিল। কিন্তু এটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, নকশা অনুমোদনে এক ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হবে। পরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে জায়গা ছাড়ের পরিমাণ গড়ে ৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করা হলেও পরে তা কমিয়ে অর্ধেক আনা হয়েছে।
সূত্র জানায়, সংশোধনী বিধিমালায় নতুন বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে বিশেষ করে ২ কাঠা বা এর নিচের পরিমাণ জমিতে বাড়ি বা আবাসিক হোটেল নির্মাণে চারপাশের জমি ছাড়তে হবে সাড়ে ৩০ ভাগ।
আর বাকি সাড়ে ৬৯ ভাগে ভবন নির্মাণ করা যাবে। ২ কাঠা থেকে ৩ কাঠা পর্যন্ত জমির ক্ষেত্রে ছাড়তে হবে সাড়ে ৩২ ভাগ, ৩ থেকে ৫ কাঠার ক্ষেত্রে সাড়ে ৩৪ এবং ৫ থেকে ১০ কাঠার ক্ষেত্রে বাড়ি নির্মাণে জমি ছাড়তে হবে সাড়ে ৩৭ ভাগ। এ ছাড়া ৯ থেকে ১২ কাঠার জমির ক্ষেত্রে ছাড়তে হবে সাড়ে ৩৯ ভাগ, ১২ থেকে ১৪ কাঠায় সাড়ে ৪২ ভাগ, ১৪ থেকে ১৮ কাঠায় সাড়ে ৪৪ ভাগ এবং ১৮ কাঠার ওপর জমির ক্ষেত্রে বাড়ি বানাতে চারপাশের জায়গা ছাড়তে হবে সাড়ে ৪৭ ভাগ। তবে এ প্লটে ভবন ৩৩ মিটার বা ১০ তলা পর্যন্ত নির্মাণ করা যাবে। আর বাকি প্লটে ৬ তলার ওপরে ভবন নির্মাণ করা যাবে না।
বিধিমালাটি প্রণয়নের পর নতুন বাড়ি নির্মাণে স্থবিরতা দেখা দেয়। বিশেষ করে দেড় থেকে পৌনে দুই কাঠার ছোট প্লটের মালিকদের শোচনীয় অবস্থা লক্ষ্য করা যায়। ছোট আকারের প্লটের ক্ষেত্রেও ৩২ ভাগ জায়গা ছাড়ার নিয়ম রয়েছে। এসব বাড়ির মালিকের সংখ্যা ১ লাখের বেশি। এ বিধান প্রণয়নের পর থেকেই হাত গুটিয়ে বসে আছেন এসব বাড়ির মালিক। তারা বিধিমালার পরিবর্তনের আর্জি জানান। এ বিষয়ে তারা এলাকার সংসদ সদস্য, গৃহায়ন মন্ত্রণালয় ও রাজউকে ধর্ণা দেন। এমন আবেদনের স্তূপ জমা পড়ছে রাজউকে। ১৯৯৬ সালে প্রণীত পুরনো বিধিমালার আলোকে তারা বাড়ি নির্মাণ করতে আবেদন জানান সরকারের কাছে। এ বিধিমালা ২ কাঠার নিচে প্লটে ভবন নির্মাণে জায়গা ছাড়তে হতো না। রাজউকও নতুন বিধিমালা ছাড়া বাড়ির নকশা অনুমোদন দিচ্ছে না। ফলে এসব মালিক নতুন ভবন তৈরি করছেন না। একইভাবে ২ কাঠার বেশি জমির মালিকরাও বিদ্যমান বিধিমালায় ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন।
রাজউকের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিদ্যমান বিধিমালা জারি হওয়ার পর কয়েকটি বিধি ও উপবিধি প্রয়োগে জটিলতা দেখা দিয়েছে। ফলে নকশা অনুমোদন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বিলম্ব হচ্ছে। বিধিমালা-২০০৮ অনুসরণ করতে গিয়ে ক্ষুদ্র আয়তনের প্লটে বাড়ির নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিচ্ছে বলে অনেক প্লট মালিক মন্ত্রণালয় ও রাজউকে আবেদন করছেন। এসব প্লট মালিকদের বক্তব্য, ৩ কাঠা আয়তনের প্লটে বাড়ি করার জন্য যে পরিমাণ জমি ছাড় দেওয়ার বিধান রয়েছে এতে বসবাসযোগ্য বাড়ি তৈরি সম্ভব নয়। তারা বিধিমালা ১৯৯৬-এর আলোকে নকশা অনুমোদনের আবেদন করছেন। তাদের আবেদন পর্যালোচনা করা হয়েছে। রাজউকের পক্ষ থেকেও বিদ্যমান বিধিমালাটি সংশোধনের পক্ষে মত দিয়ে একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এটি বিবেচনা করেই সংশোধনী বিধিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে।
মন্তব্যসমূহ
  • Md. Ashraful Haque 11 years ago
    জরিমানা ও কাঠামো ভেঙে ফেলা হবে।
  • Md. Ashraful Haque 11 years ago
    রাউজক ইমারত নির্মান বিধিমালাতে পাবেন
  • Guest 11 years ago
    2.75 কাঠা জমিতে চারপাশে কতটুকু জায়গা ছাড়তে হবে?
  • Md. Ashraful Haque 11 years ago
    কোন এলাকাতে তার উপর নির্ভর করবে।
  • Guest 11 years ago
    জায়গা না ছেড়ে যদি বাড়ি তৈরি করে ফেলি তাহলে আইনে কোন সমস্যা হবে কি হলে কি ধরনের সমস্যা হবে
লগইন করুন মন্তব্য করার জন্য